আপনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু
প্রশ্নের উত্তর

খুব সহজে বললে, আমাদের শরীরের রক্তের শিরার ভেতর আমাদের রক্ত চলাচলের সময় আমাদের শিরায় যে চাপ সৃষ্টি হয় তাকেই রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার বলে। 

হৃৎপিণ্ড সংকোচনের সময়কে সিস্টোল বলা হয়। রক্ত হৃদপিণ্ডের সংকোচনের ফলে ছিটকে বের হয়ে ধমনীতে প্রবেশ করে। এ সময় ধমনীর দেওয়ালে রক্তের যে চাপ তৈরি হয় তাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ বলা হয়। 

স্বাভাবিক ভাবে শান্ত অবস্থায় সিস্টোলিক রক্তচাপ হবে ১২০ মিলিমিটার মার্কারি অথবা তার কম। মানসিক চাপ, পরিশ্রম, বা হৃদপিণ্ড দ্রুত গতিতে চলবে এমন যে কোনো ঘটনায় সিস্টোলিক রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে শান্ত অবস্থাতেও এর মান ১২০ মিলিমিটার মার্কারির বেশী হতে পারে। অনেক বেশী পানি শূন্যতায়, কোনো আঘাতে অতিরিক্ত রক্তপাত হলে বা হৃদপিণ্ডের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে গেলে সিস্টোলিক হাইপোটেনশন বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম সিস্টোলিক রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।

হৃদপিণ্ডের সংকোচন শেষ হবার পরে এর চেম্বার বা নিলয়গুলি শিথিল হয়ে তাতে আবার রক্ত এসে জমা হয়, পরের সংকোচনের প্রস্তুতি হিসেবে। এই সময়টাকে বলা হয় ডায়াস্টোল। আর এসময়ের রক্তচাপকেই বলা হয় ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ। 

স্বাভাবিকভাবে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ হবে ৮০ মিলিমিটার মার্কারি অথবা তার কম। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে শান্ত অবস্থাতেও এর মান বেশী হতে পারে। আর পানিশূন্যতায় বা অতিরিক্ত রক্তপাতের ফলে ডায়াস্টোলিক হাইপোটেনশন দেখা দিতে পারে।

সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেসার রিডিং দুটোই ইম্পরট্যান্ট। দুটোই আমাদের হার্টের দুটি ভিন্ন সময়ের অবস্থা আমাদের জানায়। যেকোনো পার্টিকুলার সিচুয়েশনে আপনার উচিৎ আপনার ডক্টরের সাথে কন্সাল্ট করা এবং আপনার দুটো রিডিং’ই তাকে জানানো। 

হ্যাঁ। আমাদের শরীরে স্বাভাবিক নিয়মেই রক্তচাপ দিনের বিভিন্ন সময় কিছুটা পরিবর্তিত হয়। ঘুমের সময় মানুষের রক্তচাপ কম থাকে। ঘুম ভাঙার কয়েক ঘণ্টা পরে কিছুটা বেড়ে যায়, বিকাল নাগাদ রক্তচাপ সর্বোচ্চ হয়। আবার রাতে ঘুমের সময় কমে আসে। শরীরে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গেলে প্রেসারও বাড়ে। খাদ্য পরিপাক কিংবা ব্যায়ামের সময় বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। গবেষণায় বলছে, একজন মানুষের প্রতিদিনের লাইফস্টাইল, খাদ্যভ্যাস স্ট্রেস লেভেল ইত্যাদির উপর নির্ভর করে প্রতিদিনের ব্লাড প্রেসার 20mm পর্যন্ত আপ-ডাউন করতে পারে।  ঠিক এই কারনেই আপনার উচিৎ প্রতিদিন আপনার ও আপনার পরিবারে সবার নিয়মকরে ব্লাড প্রেসার মাপা, ব্লাড প্রেসার লগবুকে সেই রিডিং’এর রেকর্ড রাখা এবং যেকোনো প্রয়োজনে ডক্টরের সাথে সেই লগবুক শেয়ার করা।

আপনার ব্লাড প্রেসার ঠিক রাখতে চাইলে আপনাকে বিশাল কোনো যজ্ঞ কিংবা কঠিন কোনো কাজ করতে হবে না। কিছু খুবই সাধারন লাইফস্টাইল চেঞ্জের মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার ব্লাড প্রেসারকে কন্ট্রোলে রাখতে পারবেন। যেমনঃ নিয়মানুযায়ী এক্সারসাইজ, সঠিক খাবার খাওয়া, কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন ইত্যাদির মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার ও আপনার পরিবারের প্রিয়জনদের ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেন। এ বিষয়ে সুবিস্তারিত ভাবে আমাদের “হেলদি হার্ট – হ্যাপি লাইফঃ ইয়োর আল্টিমেট ওয়েলনেস হ্যান্ডবুক”এ বলা আছে। হ্যান্ডবুকটি আমাদের কম্বো প্যাকেজের একটি প্রোডাক্ট। কম্বো প্যাকেজটি নিতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। 

শুধু আপনি নন, পৃথিবীর অনেক মানুষেরই এই সমস্যা হচ্ছে। তাই এই প্রশ্নের উত্তরে ২টি জিনিস অবশ্যই মনে রাখবেন। 

  • হাই ব্লাড প্রেসার একটি লাইফস্টাইল ডিজিজ। আপনি যতদিন না আপনার নিজের লাইফস্টাইল ঠিক করছেন ততদিন পৃথিবীর সেরা ডক্টরের সেরা মেডিসিন খেলেও আপনার ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোলে আসবে না। তাই আগে আমাদের “হেলদি হার্ট – হ্যাপি লাইফঃ ইয়োর আল্টিমেট ওয়েলনেস হ্যান্ডবুক”এ সাজেস্ট করা সিম্পল লাইফস্টাইল চেঞ্জগুলো আপনার জীবনে আনুন। দেখবেন হাই ব্লাড প্রেসারের জন্য অনেকক্ষেত্রে আপনার মেডিসিন খাবার প্রয়োজনীয়তাই কমে আসবে। 
  • আপনার মেডিসিন কেন কাজ করছে না এর উত্তর দেবার ক্যাপাবিলিটি সবচেয়ে বেশি আপনার ডক্টরের। তাই সময় নষ্ট না করে দ্রুত আপনার ডক্টরের সাথে কন্সাল্ট করুন।

অ্যামেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন মতে, যাদের হাই ব্লাড প্রেসার রয়েছে এবং যাদের হাই ব্লাড প্রেসার হবার চান্স রয়েছে অর্থাৎ প্রত্যেককেই নিয়মিত ঘরে বসে ব্লাড প্রেসার মনিটর করা উচিৎ। আপনার ব্লাড প্রেসারের সবচেয়ে সঠিক রিডিং তখনই পাওয়া যাবে যখন আপনি আপনার বাসার কমফোর্টেবল পরিবেশে আছেন। আমাদের দেশে সাধারনত ব্লাড প্রেসার ফার্মেসি কিংবা হসপিটালে ডক্টরের কাছেই মাপা হয় যা আমাদের ব্লাড প্রেসারের সঠিক রিডিং আমাদের দেয় না। এসব জায়গায় কখনই ব্লাড প্রেসার মাপার যে সাধারণ মিনিমাম নিয়মগুলো আছে তা মানা হয় না। ফার্মেসিতে বেশিরভাগ সময় এই মিনিমাম নিয়মগুলো জানেই না। ডক্টরের ক্ষেত্রে তারা জানলেও সময়ের অভাবে তারাও তা মানেন না। কিন্তু এর ফলে আপনার ব্লাড প্রেসারের রিডিং ভুল আসে। এছারাও ঘরের বাইরে গিয়ে প্রেসার মাপলে যে ভুল রিডিং আসে তা মেডিক্যালি স্বীকৃত, যা “হোয়াইট কোট সিনড্রোম” নামে পরিচিত।

সহজ ভাষায় বললে, আপনি যখন বাসার বাইরে গিয়ে ফার্মেসি কিংবা হসপিটালে গিয়ে আপনার ব্লাড প্রেসার মাপবেন তখন ব্লাড প্রেসার মাপার সব অফিসিয়াল নিয়ম মানা সত্ত্বেও আপনার ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিকের তুলনায় কম বেশি দেখাবে। তবে বাসায় বসে মাপলে এই পরিবর্তন আসতো না। একেই মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় হোয়াইট কোট সিনড্রোম বলে। ঠিক এই কারনেই বাইরে না গিয়ে ঘরে বসেই সঠিক নিয়মে নিয়মিত ব্লাড প্রেসার মাপা উচিৎ। আন্তর্জাতিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপার সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতি আমরা আমাদের “হেলদি হার্ট – হ্যাপি লাইফঃ ইয়োর আল্টিমেট ওয়েলনেস হ্যান্ডবুক”এ বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। 

ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করার জন্য সাধারন অস্কাল্টেশন টেকনোলজির বদলে অসিলোমেট্রিক টেকনোলজি ব্যাবহার করে। অস্কাল্টেশন টেকনোলজিতে ব্লাড প্রেসার মাপার সময় স্টেথোস্কোপের সাহায্যে স্পেসিফিক কিছু হার্টবিট শোনা হয় যার মাধ্যমে সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেসার রিডিং বের করা হয়। 

অন্যদিকে, অসিলোমেট্রিক টেকনোলজিতে আমাদের শরীরের রক্তের শিরার ভেতরে রক্ত চলাচলের ফলে যে কম্পন/ভাইব্রেশন হয় সেই ভাইব্রেশনকেই কনভার্ট করে ডিজিটাল রিডিং হিসেবে দেখা যায়। ওমরন ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটর অসিলোমেট্রিক টেকনোলজি ব্যাবহার করে ব্লাড প্রেসার মাপে। তাই এই কারনেই স্টেথোস্কোপ কিংবা ব্লাড প্রেসার মাপার বিশেষ দক্ষতা ছারাই যে কেউ এমনকি একটি ছোটো বাচ্চাও খুব সহজেই ওমরন ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটরের সাহায্যে তাদের ব্লাড প্রেসার মাপতে পারে। 

প্রতিটি ওমরন ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটরের অ্যাকুরেসি ক্লিনিকালি প্রুভেন। অর্থাৎ আপনি সঠিকভাবে  ব্লাড প্রেসার মাপলে, ওমরন ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটরের রেজাল্ট নিয়ে থাকতে পারেন সম্পূর্ণ নিশ্চিত। এর অ্যাকুরেসি AAMI (Association of Medical Instrumentation), অ্যামেরিকান FDA (The Food and Drug Administration) এর মতো বিশ্বের বড় বড় নামকরা সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত। বাসার জন্য ব্লাড প্রেসার মেশিন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই এর অ্যাকুরেসি ও ইজ অফ ইউজ নিশ্চিত করে তবেই কেনা উচিৎ। 

অবশ্যই। আপনি কিছু পার্থক্য অবশ্যই দেখতে পারবেন। যদিও এটা নরমাল এবং নানান কারনে হয়ে থাকে। যেমনঃ 

  • একজন পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষেরও দিনের একেকসময় ব্লাড প্রেসার একেকরকম হয়। তাই সবকিছু ঠিক থাকা অবস্থায়ও আপনার ব্লাড প্রেসারে চেঞ্জ দেখতে পারেন। 
  • গবেষণা অনুযায়ী, আপনার লাইফস্টাইল, ফুড হ্যাবিট, স্ট্রেস লেভেল ইত্যাদির উপরেও নির্ভর করে দিনের বিভিন্ন সময় আপনার ব্লাড প্রেসারের রিডিং 20mm পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে। 
  • আপনি “হোয়াইট কোট সিনড্রোমে” আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। এর ফলে বাসার বাইরে ব্লাড প্রেসার মাপার কারনে ব্লাড প্রেসার রিডিং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দেখায়। 
  • আপনি “মাস্কড হাইপারটেনসনে” আক্রান্ত। এর ফলে বাসার বাইরে ব্লাড প্রেসার মাপার কারনে ব্লাড প্রেসার রিডিং স্বাভাবিকের চেয়ে কম দেখায়। 

তাই ডক্টরের কাছে গিয়ে ব্লাড প্রেসারে পরিবর্তন দেখলেই ঘাবড়ে যাবেন না। সবার আগে দেখুন আপনার ডক্টর সঠিক নিয়মে ব্লাড প্রেসার মাপছেন কিনা। যদি সঠিকভাবে মাপার পর এমন পার্থক্য দেখা যায় তবে ভয় না পেয়ে ডক্টরের সাথে এই ব্যাপারে কন্সাল্ট করুন। 

ব্লাড প্রেসারের রিডিং এর ক্ষেত্রে ডান হাতের রিডিং ও বাম হাতের রিডিং’এ সাধারনত পার্থক্য দেখা যায়। সাধারনত দুই হাতের রিডিং এর এই পার্থক্য হয় ১০ মিলি এর মতো। ওমরন ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটরটি ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে বাম হাতে ব্লাড প্রেসার মনিটর করার জন্য যেহেতু ক্লিনিকাল স্টাডি অনুযায়ী আমাদের বাম হাতই হচ্ছে আমাদের ব্লাড প্রেসার মাপার জন্য সবচেয়ে অ্যাকুরেট এবং অ্যাপ্রোপ্রিয়েট। 

অবশ্যই, ব্লাড প্রেসার মনিটরের সাহায্যে ব্লাড প্রেসার মাপার ক্ষেত্রে অ্যাকুরেট রেজাল্ট পেতে চাইলে সঠিক কাফ সাইজ হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্লাড প্রেসার মনিটরের সাথের কাপড়ের মতো যে অংশটি আমরা হাতে বাঁধি সেটাই হল কাফ। যদি আপনি ভুল সাইজের কাফ ব্যাবহার করেন তবে আপনি আপনার ব্লাড প্রেসার রিডিং’ও ভুল ও অস্বাভাবিক পাবেন এবং আমাদের ব্লাড প্রেসার ডিভাইসটি থেকেও ইরর মেসেজ পাবেন। 

সঠিকভাবে কাফ সাইজ নির্ণয় করার জন্য হাতের মাপ নিতে চাইলে কাপড় মাপার গজফিতা দিয়ে সবচেয়ে সহজেই মাপতে পারবেন। কনুইএর উপর আপনার মাসলে গজফিতা জড়িয়ে নিন। ফিতাটি টাইট করে ধরবেন না। এবার আপনার হাতের মাপ খুব সহজেই জানতে পারলেন। এখন আপনার হাতের সাইজ যেই কাফে আভেইলএবল সেটি কিনুন। 

লাইফগার্ড বাংলাদেশ থেকে আমাদের সম্মানিত ক্রেতারা যখন আমাদের স্পেশাল ওমরন কম্বো প্যাকেজটি কেনেন তখন ওমরন ব্লাড প্রেসার মনিটরের সাথে আমরা সাধারনত ২২-৩২ সেমিঃ এর কাফ প্রভাইড করি যা সাধারনত আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের হাতের সাইজের জন্য আপ্রোপ্রিয়েট। 

ইরর ম্যাসেজ পাবার একটিই অর্থ। ডিভাইসটি আপনাকে কোন বিষয়ে সতর্ক করছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ওমরন ব্লাড প্রেসার মনিটরের সাথে আশা ইন্সট্রাকশন ম্যানুয়ালের একটি সেকশনে নানা ধরনের ইরর ম্যাসেজ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। দয়াকরে সেটি দেখুন। 

সুস্থ থাকতে চান?

আজই আমাদের ইমেইল নিউজলেটারে
সাবস্ক্রাইব করুন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক
নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পান

** পুরোপুরি ফ্রি **

Made with in Dhaka, Bangladesh © 2024 LifeGuard Bangladesh. All rights reserved.
Made with in Dhaka, Bangladesh
© 2024 LifeGuard Bangladesh. All rights reserved.